SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - সমন্বয় ও নিঃসরণ | NCTB BOOK

মেরুদণ্ডের মধ্যে মেরুরজ্জু সরক্ষিত থাকে। মেরুরজ্জুর ধূসর পদার্থ থাকে ভিতরে এবং শ্বেত পদার্থ থাকে বাইরে অর্থাৎ মস্তিষ্কের উল্টা। মেরুরজ্জুর শ্বেত পদার্থের ভিতর দিয়ে ভালবাহী এবং অনুভূতিবাহী স্নাত যাতায়াত করে।

চিত্র ৫.৫ : মানবদের স্নায়ুতন্র

 

প্রতিবর্ত চক্র

তোমার হাতে মশা বসলে তুমি কী করবে? অবশ্যই মশাটাকে মারতে চেষ্টা করবে। তোমার হাতে মশা বসেছে তুমি কীভাবে টের পেলে? ভূমি মশার কামড় অনুভব করেছ, তাই তুমি এমনটি করেছ। তুমি যার কাযয় অনুভব করেছ স্নায়ুর উদ্দীপনার জন্য। স্নায়ুর ক্রিয়া যা উদ্দীপনার সাড়া দেওয়াও তাই। আয়নাতে জানো ফেনার সঙ্গে সঙ্গে যেমন ভালো প্রতিফলিত হয়, প্রতিবর্ত ক্রিয়াও কতকটা তেমনি। প্রতিবর্ত ক্রিয়া ঘটে স্নায়ুর তাড়নার তাৎক্ষণিক কার্যকারিতার ফলে। স্নায়ুতাড়না কী? স্নায়ুর ভিতর দিয়ে যে সংবাদ বা অনুভূতি প্রবাহিত হয় তাকে স্নায়ু তাড়না বলে। আমরা যেমন হাতে মশা কামড় দিলে মশা তাড়িয়ে দেই অথবা হাতে বা পায়ে পিন ফুটলে আমরা নিমিষে তা সরিয়ে নেই। এটা কীভাবে ঘটে? হাতের উপর মশা বসলে স্নায়ুর গ্রাহক প্রান্তের উদ্দীপক হলো মশা, এর উপস্থিতি অনুভব করার সঙ্গে সঙ্গে কোষ প্রান্তের সাড়া জাগে। আমরা মশাটিকে তাড়িয়ে দেই অথবা মেরে ফেলি। এ সকল ক্রিয়া যেন অজ্ঞাতসারে আপনা আপনি হয়ে থাকে। এরূপ যে ক্রিয়া অনুভূতির উত্তেজনা দ্বারা উৎপন্ন হয়, মস্তিষ্ক দ্বারা চালিত হয় না তাকেই প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। প্রতিটি প্রতিবর্ত চক্রের পাঁচটি অংশ থাকে। যথা- ১) গ্রাহক অঙ্গ ২) অনুভূতিবাহী স্নায়ু ৩) প্রতিবর্ত কেন্দ্র ৪) আজ্ঞাবাহী স্নায়ু এবং ৫) সাড়া প্রদানকারী অঙ্গ। তাৎক্ষণিক আত্মরক্ষার জন্য কোনো অঙ্গের তড়িৎক্রিয়ার নাম প্রতিবর্ত ক্রিয়া। উদাহরণ- ১) আগুনে হাত লাগা বা পিনে হাত ফোটা মাত্র টেনে নেওয়া। ২) চোখে প্রথম আলো পড়ামাত্র চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া।

চিত্র ৫.৬ : মানবদেহের প্রতিবর্ত চক্র

 

ব্যাখ্যা : হাতের চামড়ায় পিন ফোটামাত্র অনুভূতিবাহী স্নায়ুতন্ত্র পিন ফোটার যন্ত্রণা গ্রহণ করে। এই যন্ত্রণাদায়ক তাড়না অনুভূতিবাহী স্নায়ুতন্ত্রর মাধ্যমে মেরুরজ্জুতে পৌঁছে। ঐ একই তাড়না অনুভূতিবাহী স্নায়ুকোষ থেকে আজ্ঞাবাহী স্নায়ুতে প্রবাহিত হয়। স্নায়ুতাড়না আজ্ঞাবাহী কোষে পৌঁছামাত্র পেশিতে প্রেরণ করে। ফলে পেশি সংকুচিত হয় এবং যন্ত্রণার উৎস থেকে হাত সরিয়ে দেয়।

এখানে অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়াকে সহজ করে বর্ণনা করা হলো। আসলে পিন ফুটানোর সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু অনুভূতিবাহী স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রহণ করে। এ উদ্দীপনা অনেকগুলো পরস্পর সংযুক্ত স্নায়ুকোষের মাধ্যমে অনেকগুলো আজ্ঞাবাহী কোষে প্রবাহিত হয়। এসব আজ্ঞাবাহী স্নায়ু পেশিতে উদ্দীপনা বহন করে হাত সরিয়ে আনে। অনুভূতি মস্তিষ্কেও পৌঁছায়। ফলে কী ঘটছে শরীর তা জানতে পারে।

প্রতিবর্ত ক্রিয়া একটি সমন্বিত কার্যক্রম। প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় যে পাঁচটি অংশ কাজ করে এদের যেকোনো একটির অভাবে কাজটি সঠিকভাবে হতে পারে না।

কাজ : তোমার হাতে পিন ফুটলে অথবা হারিকেনের গরম চিমনির উপর তোমার হাত পড়লে তুমি কী করবে? কেন করবে? কীভাবে করবে? তা চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।
Content added || updated By

Promotion